ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট স্পট গুলোর প্রতি বরাবরই আকর্ষণ রয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম দেশগুলোর তালিকায় সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে ভারত। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ মেডিক্যাল এবং টুরিস্ট ভিসায় ইন্ডিয়ায় ভ্রমণ করে। বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে ঘুরতে যেতে চান তাদেরকে টুরিস্ট করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই জেনে রাখতে হবে যেমন ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা (Indian Tourist Visa) করতে কি কি লাগে, কিভাবে আবেদন করা যায় বা কত খরচ হয় ইত্যাদি।
আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে। আশা করা যায় একজন টুরিস্ট হিসেবে আপনার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর এখান থেকে পাবেন যা আপনাকে দেশটিতে ভ্রমণে সহায়ক হবে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান পদ্ধতি
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে?
ভ্রমণ পিপাসুরা নিশ্চয় জানেন যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দেশের টুরিস্ট ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় টুরিস্ট ভিসা পাওয়া খুব একটা কঠিন কিছু নয়। এই ভিসা করতে কি কি লাগে তা আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে। নিচে দরকারি জিনিস গুলোর তালিকা দেয়া হলোঃ
- ভারতীয় টুরিস্ট ভিসার আবেদন পত্র।
- পাসপোর্টটি অবশ্যই বৈধ হতে হবে এবং এটির মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থাকতে হবে।
- সদ্যতোলা ২”×২” সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি।
- আবেদনকারীর আইডি কার্ড অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট।
- বর্তমান ঠিকানা নিশ্চিত করতে গ্যাস/পানি/বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি।
- আবেদনকারীর বিগত ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- ট্রেড লাইসেন্স বা NOC কার্ডের ফটোকপি যেটা আপনার পেশাগত অবস্থানের প্রমাণ।
- পুরাতন পাসপোর্টের কোন ফটোকপি যদি থাকে সেটা।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার আবেদন করবেন কিভাবে?
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এটির একটি নির্ধারিত উপায় রয়েছে। এ পর্যায়ে আমরা কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করছি যেগুলো আপনাকে সহজে টুরিস্ট ভিসার আবেদন করতে সহায়তা করবেঃ
ধাপ ১ঃ প্রথমে ভারতের হাই কমিশনের ওয়েবসাইট https://www.hcidhaka.gov.in/ এ প্রবেশ করুন এবং আবেদন ফরম পূরণ করুন।
ধাপ ২ঃ আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করার পর আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে আবেদন ফী প্রদান করুন।
ধাপ ৩ঃ পেমেন্ট হয়ে গেলে আপনার আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আপনার নিকটস্থ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন অফিসে যান।
ধাপ ৪ঃ এরপর আপনাকে একটি ইন্টারভিউয়ের মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে। তবে এটি একটি ব্যক্তিগত ইন্টারভিউ হতে পারে যেটা সবার ক্ষেত্রে নয়।
ধাপ ৫ঃ ভিসা অনুমোদন পেলে আপনি এটি ভারতীয় হাই কমিশন বা VAC থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি সময়
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে?
জায়গা বিশেষে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে ভিন্ন সময় লাগতে পারে। যেমন আপনি যদি ঢাকা থেকে ভিসা পেতে চান তাহলে তিন থেকে সাতদিন সময় লাগতে পারে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১৫ দিনও লাগতে পারে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবার পর আপনি ইন্ডিয়ান ভিসার ওয়েবসাইট থেকে ভিসা প্রক্রিয়ার সর্বশেষ খবর জানতে পারবেন। ভারতীয় অ্যাম্বেসিতে সমস্ত দরকারি কাগজপত্র জমা দেয়ার পর আপনাকে একটি টোকেন দেয়া হবে। পরবর্তীতে এই টোকেন ব্যবহার করেই আপনাকে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
ভিসা নিতে আবেদনকারীকে অবশ্যই সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। তবে তিনি যদি অনিবার্য কারণবশত না যেতে পারেন তাহলে তার পক্ষ থেকে অন্য গিয়েও সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি মনোনয়নপত্র দিতে হবে যেখানে তার স্বাক্ষর থাকবে এবং উপস্থিত হতে না পারার কারণ থাকবে। এছাড়া এটিও উল্লেখ থাকতে হবে যে তিনি উক্ত ব্যক্তিতে ভিসা সংগ্রহের পূর্ণ ক্ষমতা দিচ্ছেন।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কত টাকা খরচ হবে?
ইন্ডিয়ার টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে খরচ করতে হতে পারে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা। বাংলাদেশের বিভিন্ন ভিসা এজেন্সি আপনাকে বিভিন্ন খরচে ভিসা দিতে পারে। তবে এটি শুধুমাত্র ভিসার খরচ, এর পূর্বে আপনাকে পাসপোর্ট বানাতে হবে যদি না থাকে। পাসপোর্টের জন্য খরচ করতে হবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তারমানে আপনি ধরেই রাখতে পারেন যে ইন্ডিয়ার টুরিস্ট ভিসার সর্বমোট খরচ হবে ৩০ হাজার বা তার থেকে কিছু বেশী। তবে ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী খরচ বাড়বে। এছাড়া ফ্যামিলি ভিসার ক্ষেত্রে খরচ আরও কিছু বেশী হবে।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কি বাড়ানো যায়?
না, এটি বাড়ানোর কোন উপায় নেই। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ১৮০ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এটি বাড়ানোর কোন উপায় রাখা হয়নি অর্থাৎ নির্ধারিত সময় শেষ হবার পূর্বেই আপনাকে ফিরে আসতে হবে।
পরিশেষে
ভ্রমণ প্রেমিকদের কাছে ভারত একটি অন্যতম পছন্দের জায়গা। তবে দর্শনীয় স্থান গুলো ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আগেই পাসপোর্ট এবং ভিসা করতে হবে এবং জানতে হবে যে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে। আশা করছি, উপরের আলোচনা থেকে আপনি জেনে নিয়েছেন এই সম্পর্কে। আমরা আবেদন করার পদ্ধতির সাথে ভিসা ও পাসপোর্টের সম্ভাব্য খরচও উল্লেখ করেছি।
আপনি উক্ত ধাপ গুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই ভিসার আবেদন করতে পারবেন। যাইহোক, এখনও যদি আপনার ভিসা সংক্রান্ত অন্য কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না।