কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত?

আপনি কি কম্বোডিয়া যেতে চাচ্ছেন? যদি কাজের ভিসায় যেতে চান তাহলে অবশ্যই জেনে রাখা উচিৎ যে কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত। কম্বোডিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত একটি দেশ। এর পশ্চিমে এবং উত্তর-পশ্চিমে থাইল্যান্ড, উত্তরে লাওস, পূর্বে ভিয়েতনাম, এবং দক্ষিণে থাই উপসাগর অবস্থিত। কম্বোডিয়ার ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক পথ এবং পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে।

এটি একটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে বৈদেশিক বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ছে। বিশেষ করে, গার্মেন্টস শিল্প, পর্যটন, এবং রিয়েল এস্টেট খাতে কাজের সুযোগ প্রচুর। এছাড়া, অনেক বিদেশি উদ্যোক্তা কম খরচে ব্যবসা শুরু করার জন্য কম্বোডিয়াকে উপযুক্ত মনে করেন। উদ্যোক্তারা ছাড়াও প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক মানুষ দেশটিতে কাজের আশায় গমন করেন এবং কাজ পেয়েও যান। আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পাবেন। 

কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে? 

আপনি বাংলাদেশ থেকে সরকারি এবং বেসরকারি দুইভাবেই কম্বোডিয়া যেতে পারবেন। আপনি যদি সরকারিভাবে দেশটিতে যান তাহলে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। তবে বেসরকারিভাবে যেতে হলে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। এর সাথে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচপাতি দিয়ে আপনার মোট প্রায় ১২ লাখ টাকার মত লাগবে। 

আরও পড়ুনঃ পর্তুগাল টাকার মান কত

কম্বোডিয়াতে কাজের বেতন কত? 

যারা সাধারণত কাজের ভিসায় কম্বোডিয়াতে যান তাঁরা বেশ ভালো বেতনেই সেখানে কাজ করতে পারেন। আপনি যদি দেশটিতে কৃষিকাজ করেন তাহলে মাসিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন। এটিই ঐ দেশের কাজের সর্বনিম্ন বেতন। দেশটিতে যেমন কাজের চাহিদা রয়েছে ঠিক তেমনি কাজের জন্য ভালো বেতনও রয়েছে। 

এখানকার একজন নির্মাণ শ্রমিক মাসে ৫০ থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এছাড়া একজন ড্রাইভারের বেতন ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। আপনি যদি এর থেকেও কোন ভালো পজিশনে কাজ করেন অর্থাৎ কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কোন কোম্পানিতে কাজ করেন তাহলে নিঃসন্দেহে আপনার বেতন হবে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। 

কম্বোডিয়া কোন কাজের চাহিদা সবথেকে বেশি?

কম্বোডিয়ায় বেশ কয়েকটি খাতে শ্রমের চাহিদা বেশি রয়েছে, বিশেষ করে নির্মাণ, পোশাক শিল্প, কৃষি, পর্যটন এবং সেবা খাতে। দেশটির অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে নির্মাণ খাতে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। 

এছাড়া, পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্প কম্বোডিয়ার অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত, যেখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। কৃষি খাতেও প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে ধান চাষ, রাবার উৎপাদন এবং মাছ চাষের ক্ষেত্রে। 

পর্যটন খাতের বিকাশের ফলে হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য দক্ষ কর্মীর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, পরিষেবা খাত যেমন—ড্রাইভার, নিরাপত্তা প্রহরী, এবং গৃহকর্মীর কাজেও অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এসব খাতে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসায় কম্বোডিয়া যাবেন কিভাবে?

বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে চাকরির অফার লেটার পেতে হয়, যা নির্ভরযোগ্য রিক্রুটিং এজেন্সি বা নিয়োগকর্তার মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। এরপর কম্বোডিয়ার দূতাবাস বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদন করার সময় পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এবং চাকরির অফার লেটার জমা দিতে হয়। ভিসা অনুমোদনের পর বিমানের টিকিট কেটে কম্বোডিয়ায় যেতে পারবেন। 

যাবার আগে বাংলাদেশ সরকারের বিএমইটিতে নাম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক, যা অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এছাড়া, নির্দিষ্ট কিছু কাজের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আপনি বৈধ ভিসা নিয়ে কম্বোডিয়ায় গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন। 

ন্যুনতম কত বছর বয়সে কম্বোডিয়া যাওয়ার যায়? 

কম্বোডিয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে যেতে হলে সাধারণত ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হতে হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রম আইন এবং কম্বোডিয়ার অভিবাসন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, নির্দিষ্ট কিছু পেশার জন্য বয়সের সীমা বেশি হতে পারে। বিশেষ করে, নির্মাণ, পোশাক শিল্প, কৃষি ও সেবা খাতে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত বয়সসীমা নির্ধারিত থাকে। 

রিটায়ারমেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে ব্যক্তির বয়স ৫৫ বছর বা তাঁর বেশি হতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তারা অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য বয়সের সীমা কিছুটা শিথিল করতে পারেন। তাই কম্বোডিয়ায় কাজের জন্য যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা কর্মসংস্থান সংস্থার মাধ্যমে বয়সসীমা ও অন্যান্য শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গুরুত্বপূর্ণ।

শেষ কথা

আশা করছি কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত সে সম্পর্কে আমরা আপনাকে একটি বিস্তারিত ধারণা দিতে পেরেছি। দেশটি আগের তুলনায় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেশ উন্নত হয়েছে, আর তাই সেখানকার কাজের বেতনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আপনি যদি বাইরের দেশে গিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে যেতে পারেন কম্বোডিয়ায় কারণ সেখানে দক্ষ লোকদের জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে। 

Author

  • Sharmin Shimi is a dedicated education writer at ResultKoi.com, specializing in academic updates, admission guidelines, and exam results in Bangladesh. With a passion for simplifying complex information, she helps students stay informed about their educational journey.

    View all posts

Leave a Comment