কানাডা যাওয়ার খরচ কত

আপনি কি জানেন কানাডা যাওয়ার খরচ কত? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। প্রতিবছরই ট্যুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসায় অনেকেই কানাডায় গমন করতে চান। খরচের বিষয়টি আগে থেকে জানা না থাকলে কানাডা যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন কারণ অনেকসময় দেখা যায় যে কানাডাতে গিয়ে টাকায় টান পড়ে। 

এছাড়া কোথায় কিভাবে খরচ করা উচিৎ তা না জানা থাকলেও সেখানে থাকাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই আপনারা যারা কানাডা যেতে চান তাদের অবশ্যই খরচের পরিমাণ ও খরচের ধরন সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা নিয়ে রাখতে হবে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা কানাডা যাওয়ার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কত টাকা লাগে কানাডা যেতে এবং সেখানে থাকতে। 

কানাডা যাওয়ার খরচ কত? (Canada Immigration Cost)

কানাডা যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াও আরও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আছে। সেখানে যাওয়ার পর যেমন খরচ আছে তেমনি যাওয়ার আগেও কিছু বাড়তি ব্যয়ও আপনাকে করতে হবে। আপনি যদি উচ্চ শিক্ষা বা পড়াশুনার জন্য যেতে চান তাহলে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগবে। তবে যদি আপনার স্কলারশিপ থাকে তাহলে কথা ভিন্ন, কারণ এক্ষেত্রে আরও কম টাকায় আপনি যেতে পারবেন। 

যারা ভ্রমণের জন্য যেতে চান তাদের খরচ কিছুটা কম অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ টাকা হলেই আপনি ভ্রমণের জন্য চলে যেতে পারেন কানাডা। তবে ক্ষেত্র বিশেষে এর থেকে বেশি দরকার হতে পারে। সবথেকে বেশি টাকা লাগে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কানাডা যেতে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এর থেকে কম টাকায়ও হয়ে যেতে পারে। 

Read also: ইন্ডিয়ান ভিসা চেক করার নিয়ম

যারা স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে চান তাদের অবশ্যই অন্তত প্রথম কয়েকমাস চলার মত টাকা সাথে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। এমনিতেই কানাডার জীবনযাত্রার অনেক উন্নত এবং স্বাভাবিকভাবেই লিভিং কস্ট অনেক বেশি।  এছাড়া আন্ডার গ্রেডেড শিক্ষার্থীদের কাজের অনুমতি নেই সেখানে। তাই অন্তত এই সময় গুলোর জন্য আপনাকে নিয়ে যাওয়া অর্থই খরচ করতে হবে। পরবর্তীতে আপনি যখন উপরের গ্রেডে যাবেন তখন আপনি নিজেই সেখানে কোন কাজ খুঁজে নিয়ে করতে পারবেন। 

কাজেই, নিজস্ব খরচেই যদি পড়াশুনার জন্য যান তাহলে মোট খরচ ১০ লক্ষ ধরেই নিতে হবে। কানাডায় পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই যে ভুলটি করে থাকেন সেটি হচ্ছে তাঁরা বিভিন্ন বিষয় জানার জন্য কনসালট্যান্সি করে থাকেন। 

জেনে রাখা ভালো যে এই কনসালট্যান্সির জন্য আপনাকে আরও বাড়তি কিছু ব্যয় করতে হবে। কনসালট্যান্সির থেকে যদি আপনি কানাডায় পড়াশুনা করেছে বা করছে এমন কারোর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তাহলে সেটিই সবথেকে ভালো হয়। যাদের কানাডায় পড়ার পভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের কাছ থেকে আপনি বিনামূল্যেই হেল্প পাবেন। 

অন্যান্য খরচসমূহঃ

কানাডা যাওয়ার খরচের সাথে আরও কিছু খরচ জড়িয়ে আছে যেগুলো হয়তো আপনি এখনো ভাবেন নি। আসুন সেগুলো সম্পর্কে কিছুটা ধারনা নেয়া যাকঃ  

বসবাসের খরচ

বসবাসের খরচ সাধারণত শহর অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে যেমন আপনি যদি টরন্টো, ভ্যানকুভার এবং মন্ট্রিয়াল এর মত শহরে থাকেন তাহলে একটি ১ বেডরুম অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া ১৫০০-২৫০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই শহর গুলোতে থাকার ব্যয় অনেকবেশি। তবে আপনি যদি ছোট শহরে থাকেন তাহলে খরচ কিছুটা কম হতে পারে। 

পারিবারিক ভিসা

আপনি যদি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যেতে চান তাহলে অবশ্যই অতিরিক্ত খরচ করতে হবে। এমনকি কানাডা থাকার দৈনন্দিন খরচও বাড়বে। এক্ষেত্রে মাসিক প্রায় ৭০০-১০০০ ডলার খরচ করতে হবে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০০০০ থেকে ৮৫,৭০০ টাকা। 

আগমন পরবর্তী খরচ

কানাডায় যাওয়ার পর আপনাকে একটি নতুন সিম কার্ড কিনতে হবে, এছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলতে হবে। একটি সিম কার্ড কিনতে প্রায় ২০-৩০ কানাডিয়ান ডলার প্রয়োজন হবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতেও নির্ধারিত একটি ফি দরকার। 

অন্যান্য জরুরী খরচ

অন্যান্য জরুরী খরচের তালিকার প্রথমেই রয়েছে স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসা ব্যয়। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বীমা অনেকাংশে এই খুরচের পরিমাণ কমিয়ে দিবে। তবে চিকিৎসা বাবদ কিছু খরচ ধরেই সেখানে যাওয়া ভালো কারণ কখন কিভাবে কত টাকা চিকিৎসা বাবদ ব্যয় করতে হতে পারে তা অজানা।

কানাডা যাওয়ার কোন ভিসায় কত খরচ?

কানাডার ভিসা প্রসেসিংয়ের খরচের ভিন্নতা রয়েছে। স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক পারমিট এবং ট্যুরিস্ট ভিসার খরচের কিছুটা ভিন্নতা অর্থাৎ কম বেশি রয়েছে। যেমন বর্তমানে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজন হয় প্রায় ১৫০ কানাডিয়ান ডলার অর্থাৎ ১২,৯০০ টাকা। ওয়ার্ক পারমিটের ভিসার খরচ কিছুটা বেশি। এক্ষেত্রে ১৫৫ কানাডিয়ান ডলার ভিসা প্রসেসিং ফি লাগবে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩,৩০০ টাকা। সর্বশেষ ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য লাগবে ১০০ কানাডিয়ান ডলার অর্থাৎ প্রায় ৮,৬০০ টাকা। তুলনামূলক ভাবে টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং খরচ কম। 

শেষ কথা

আশা করা যায় আপনি উপরের লেখাটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং কানাডা যাওয়ার খরচ কত সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। প্রথমত ভিসার ধরন অনুযায়ী খরচ কম বেশি হয়। এরপর সেখানে যাওয়ার পর আপনি কোথায় থাকবেন, কেমন বাসা ভাড়া নিবেন এ সবের উপরে বাকি খরচ নির্ভর করছে। তাই কানাডা যাবার পূর্বে সামগ্রিক খরচ সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা নিয়ে রাখা আবশ্যক। কানাডায় গিয়েছেন এবং সেখানে থাকছেন এমন ব্যক্তির পরামর্শ নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *