কোন দেশের টাকার মান বেশি

আপনি কি জানেন পৃথিবীর কোন দেশের টাকার মান বেশি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। সমস্ত আন্তর্জাতিক লেনদেনসমূহ সম্পন্ন হয় দুইটি দেশের ভিন্ন মুদ্রায়। এছাড়া বেশীরভাগ দেশেরই মুদ্রার মান কম বেশি হতে থাকে প্রতিনিয়ত। তবে এই প্রশ্নটি প্রায়ই আমাদের মনে ঘুরপাক খায় যে কোন দেশের মুদ্রার মান সবথেকে বেশি। 

স্বাভাবিকভাবেই এটি ধরে নিতে হবে যে যেই দেশ অর্থনৈতিকভাবে বেশি সচ্ছল সেই দেশের মুদ্রার মান তত বেশি। তবে এর বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে একটু গভীর আলোচনায় যেতে হবে। আশা করা যায় আজকের এই লেখাটির দ্বারা আপনি জানবেন যে কোন দেশের মুদ্রার মান কেমন। তো চলুন শুরু করা যাক।  

কোন দেশের টাকার মান বেশি?

এটি প্রায় অনেকেরই জানা যে বর্তমানে ইউএস ডলার একটি শক্তিশালী মুদ্রা, তবে এটি ভেবে ভুল করবেন না যে এই মুদ্রার মান সবথেকে বেশি। এটিকে শক্তিশালী বলা হচ্ছে এই কারণে যে ইউএস মুদ্রা দিয়ে বিশ্বের সবথেকে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে। সম্ভবত আপনারা অনেকেই এতদিন একটি ভুল ধারণা পোষণ করে রেখেছিলেন যে মনে হয় ইউএস মুদ্রার মানই টাকায় বেশি হয় কিন্তু আসলে এটি সত্যি নয়। 

টাকার মানের দিক দিয়ে বিশ্বে সবথেকে উপরে আছে কুয়েতের মুদ্রা। ১ কুয়েতি দিনারের মান বাংলাদেশি টাকায় ৩৮৪.৮৪ টাকা। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে কুয়েতের মুদ্রার মানই বর্তমানে পৃথিবীতে মুদ্রার বাজারে সবথেকে বেশি এবং বাকি গুলো এর নিচে অবস্থান করছে। যাইহোক, এর নিচে কারা কারা আছে তা আপনারা সবই পর্যায়ক্রমে জানবেন। 

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে?

দেশ মুদ্রা  বাংলাদেশী টাকায় মান 
কুয়েত ১ কুয়েতি দিনার প্রায় ৩৮৪ টাকা।
বাহরাইন ১ বাহরাইনি দিনার প্রায় ৩১১ টাকা
ওমান ১ ওমানি রিয়াল প্রায় ৩০২ টাকা
জর্দান ১ জর্দানিয়ান দিনার প্রায় ১৬৪ টাকা
ব্রিটিশ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড প্রায় ১৪৯ টাকা
ক্যামেন দ্বীপপুঞ্জ ১ ক্যামেন আইল্যান্ড ডলার প্রায় ১৪১ টাকা
ইউরো ১ ইউরো প্রায় ১২৭ টাকা
যুক্তরাষ্ট্র  ১ মার্কিন ডলার প্রায় ১১৭ টাকা
ব্রুনাই  ১ ব্রুনাই ডলার প্রায় ৮৯ টাকা
লিবিয়া ১ লিবিয়ান দিনার প্রায় ২৪ টাকা

কোন দেশের টাকার মান সবথেকে কম?

বাংলাদেশি টাকায় মানের দিক দিয়ে সবথেকে কম হচ্ছে লিবিয়ান দিনার এর মান। বর্তমানে লিবিয়ান দিনার বাংলাদেশের ২৪.৫১ টাকার সমান। এর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রুনাই। তবে যেসব দেশের মুদ্রার মূল্য বেশি সেসব দেশেই মূলত বাংলাদেশ থেকে লোকেরা কাজের ভিসায় বেশি যান। এসব দেশে যাওয়ার সুযোগ না পেলে লোকেরা লিবিয়া বা ব্রুনাইয়ের মত দেশ গুলোতেও যেয়ে থাকেন। 

কোন দেশের মুদ্রার মান কিভাবে বাড়ে বা কমে?

আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন যে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মান আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কেন মুদ্রার মানে এত ফারাক। এখন এই বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। 

প্রথমত কোন দেশের মুদ্রার মূল্য কত হবে তা নির্ভর করে দেশটির অর্থনীতির উপর। একটি দেশের অর্থনীতি যত শক্তিশালী হবে সেই দেশের মুদ্রার মূল্যও তত বেশি হবে যেমন কুয়েত। নিঃসন্দেহে কুয়েত অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অন্যতম শক্তিশালী দেশ। এরপর আসে রপ্তানি প্রসঙ্গ। কোন দেশ যদি বেশি পরিমাণে পন্য রপ্তানি করে তাহলে সেই দেশের মুদ্রার চাহিদাও তত বেশি থাকে এবং স্বাভাবিকভাবেই মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি পায়। 

আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান পদ্ধতি

অন্যদিকে একটি দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার যদি বেশি হয় তাহলে সেই দেশের মুদ্রার মান কমতে শুরু করে। যেসব দেশের মুদ্রার মান বর্তমানে খুবই কম সেসব দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার অনেকটাই বেশি। এবার আসি সুদের হার প্রসঙ্গে। সুদের হার বেশি মানেই মুদ্রার চাহিদা বৃদ্ধি, আর চাহিদা বৃদ্ধি মানেই মূল্য বৃদ্ধি। 

শেষ আরেকটি কথা না বললেই নয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি মুদ্রার দাম বাড়া কমার উপরে বেশ প্রভাব ফেলে। যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যত স্থিতিশীল হবে সেই দেশের মুদ্রার প্রতি মানুষের আস্থাও থাকবে। এর ফলে মুদ্রার দাম বেড়ে যাবে। 

শেষ কথা

বর্তমানে কোন দেশের টাকার মান বেশি বা কম তা আপনাকে জেনে রাখতে হবে কারণ এটি আপনার বিনিয়োগ সুযোগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়া মনে করুন আপনি একজন ফ্রিলান্সার হিসেবে বিদেশি কোন ক্লায়েন্টের কাজ করবেন করছেন, তাহলেও এক্ষেত্রে জেনে রাখা উচিৎ যে সেই দেশের মুদ্রার মূল্য কেমন। যদি মুদ্রার মূল্য বেশি হয় তাহলে কাজটি আপনার কাজে বেশ লাভজনক হবে। 

বিপরীতভাবে, মুদ্রার মান কম হলে তা স্বাভাবিকভাবেই কম লাভজনক হবে। এজন্য কাজ করার পূর্বেই বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখা ভালো। আশা করছি, এই আর্টিকেল থেকে আপনার সেই ধারণা পরিস্কার হয়েছে। এরপরও কোন জিজ্ঞাসা থাকলে জানাতে দ্বিধা করবেন না। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *